Header Ads

ভুতের ভয়।। The Fear of Ghost


ভুতের ভয়

আজকের ঘটনাটি আমার এক ভাইয়ের সাথে ঘটে যাওয়া।

আমার ভাই চাকরিসূত্রে আলাদা বাসায় থাকতো তার পরিবার নিয়ে..তার পরিবারে ছিল তার বউ আর দুটো ছেলে মেয়ে মেয়ের বয়স সাত বছর,ছেলের বয়স ছয় মাস, এখন আসা যাক মূল ঘটনায়...

 

 

 

 

ভাইয়া নতুন এক বাসায় ভাড়ায় ওঠে বাসাটা ছিল অনেকটা পুরনো আর আশেপাশে খুবই নির্জন ছিল বাড়িঘর থাকলেও সেগুলো একটু দূরে দূরে ছিল ভাইয়া সারাদিন ব্যস্ত থাকতো বাহিরে কাজে ভাবি বাসায় থাকতো বাচ্চাদের নিয়ে।

 

 


 

সে বাসায় যাওয়ার এক দেড়মাস পরেই ভাবি কিছু অদ্ভুত ঘটনা খেয়াল করতে থাকে যেমন ভাবি যখন রান্না ঘরে রান্না করত হঠাৎ হঠাৎ তার মনে হতো হয়তো পিছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে..আবার অনেক সময় মনে হতো জানালা দিয়ে কেউ তাকে দেখছে, একা একাই বেসিনের কল চালু হয়ে যেত। আবার অনেক সময় দেখা যেত ভাবী রান্না করার পর রান্নাঘরে সব গোছগাছ করে যখন বের হয়ে যেত একটু পর আবার সেখানে গেলে দেখা যেত রান্নাঘরে সব উলটপালট করে রাখা.. অনেক সময় রান্না করার সময় মনে হতো বাহিরে বাচ্চারা খেলছে কিন্তু যখন বাহিরে যেত তখন কোন বাচ্চা সেখানে দেখতোনা..এই ঘটনাগুলো যখন মাঝে মাঝেই ঘটতে থাকে তখন ভাবি ভাইকে বিষয়টা জানায়...ভাই এই বিষয়টা তেমন গুরুত্ব দেয় না মনের ভুল ভেবে উড়িয়ে দেয়, তো ভাবিও আর কথা বাড়ায় না কিন্তু একদিন ভাবির সাথে এমন এক ঘটনা ঘটলো যা সে ভাবতেও পারেনি!

 

 


 

সেদিন তার ছোট মেয়েটা ছিল তার নানু বাসায়.. ভাবি ছয় মাসের ছেলেকে নিয়ে বাসায় একা ছিল সন্ধ্যার পর সে তার বাচ্চাকে খাওয়ানোর পর ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছিল..একসময় সে খেয়াল করে ওয়াশরুম থেকে কারো গোসল করার শব্দ আসছে ভাবি মনে করে সেই হয়তো ভুলে সাওয়ার অন করে চলে আসছে..এটা ভাবার পরেও সে মনে মনে ভয় পায় বাচ্চাকে শুয়ে রেখে সে ধীরে ধীরে ওয়াশ রুমের দিকে যেতে থাকে সে যখন দরজা খুলে তখন সে আরও বেশি ভয় পেয়ে যায় কারণ ফ্লোরে এক ফোঁটা পানি ছিল না! শাওয়ার বন্ধ ছিল কিন্তু ভাবি একটু আগে স্পষ্ট শাওয়ারের শব্দ পেয়েছে তখন ভাবি দ্রুত ঘরে চলে যায় কিন্তু ঘরে যাওয়ার পর সে আরো বেশি ভয় পেয়ে যায় কারণ.. তার ছয় মাসের ছেলেটা তখন ঘরে ছিল না ভাবি অনেক বেশি ঘাবড়ে যায় আর কান্নাকাটি শুরু করে সব ঘরে খুজে, কিন্তু কোথাও পায়না ভাবি কোন উপায় না পেয়ে যখন ভাইয়াকে কল করতে যাবে তখনই তার ছেলের কান্না আসে সে দৌড়ে বারান্দায় যায় আর সেখানে তার ছেলেকে দেখতে পায়..সে কোন কিছু না ভেবে তার ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে ঘরে চলে আসে। তারপর ভাইয়া রাত্রে বাসায় আসলে তাকে সব খুলে বলে কিন্তু ভাইয়া এসব বিশ্বাস করতে নারাজ.. এর পিছনে অবশ্য একটা কারণ ছিল সেটা হচ্ছে ভাইয়া যখন এই বাড়িটায় ভাড়া নিবে তখন ভাবি এই বাসায় থাকতে রাজি ছিল না, কিন্তু ভাইয়া এত কম ভাড়ায় বাড়িটা পাওয়াতে সে আর কোনরকম আপত্তি করেনি। তাই ভাইয়া ভাবে হয়তো বাসায় থাকবে না তাই ভাবি বানিয়ে মিথ্যা কথা বলছে।




ঐদিন রাতে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া হয় অনেক কথা কাটাকাটি হয় তারপরের দিনই ভাবি তার ছেলেকে নিয়ে বাবার বাসায় চলে যায়.. রাত্রে অনেক ঝগড়া হওয়ায় ভাইয়াও তাকে আর আটকাইনি..সেদিন ভাইয়া বাসায় একা! দশটার দিকে সে বাড়ি ফিরে..

ঘরে ঢোকার সময় সে দেখতে পায় বাড়ির গেটের উপরে বড় একটা দাঁড় কাক বসে আছে ভাইয়া সেটাকে কিছুক্ষণ দেখে এরপর সেটা সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয় কাকটি চলে যায়.. ভাইয়া ঘরে এসে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পড়ে। ভাইয়া চোখে যখন ঘুম চলে আসে তখন হঠাৎ হলরুমে লাইট অন হয়ে যায় ভাইয়া কোন কিছু না ভেবে গিয়ে সেটা বন্ধ করে আবার এসে শুয়ে পড়ে... আবার যখন ভাইয়ের চোখে ঘুম চলে আসে তখন হঠাৎ রান্না ঘরে বেসিনের কল চালু হয়ে যায় ভাই এইবার উঠে একটু ভয় পায় সাহস নিয়ে রান্না ঘরের দিকে যায় গিয়ে বেসিনের কলটা বন্ধ করে.. কল বন্ধ করে যখন সে বাহিরে পা রাখে পিছন থেকে গোছানো হাড়ি পাতিল সব নিচে পড়ে যায় ভাইয়া পিছে না দেখে দৌড়ে রুমে চলে আসে...

 



 

এবার ভাইয়ার মনে ভয় জেগে ওঠে ভয় পাওয়ার সাথে সাথে সে অনেক বেশি অনুতপ্ত হয়! ভাইয়া ঘরের জানালা থেকে বাচ্চাদের হাসির আওয়াজ পেতে থাকে ভাইয়া সাহস নিয়ে জানালার কাছে যায় সেখানে গিয়ে সে দেখে ঘরের পাশে যে আম গাছ ছিল সেই আম গাছ থেকে একটি মহিলার অবয়ব বা ছায়া হাতে একটি ঝোলা নিয়ে নিচে নামছে নিচে নামার পর সে ঝোলাটা খুলে দিচ্ছে এবং ঝোলা থেকে চারটা ছোট ছোট বাচ্চা বাহিরে আসছে এবং তারা খেলছে আর অট্টহাসি দিচ্ছে এটা দেখে ভাইয়ার শরীর ভয়ে হিম হয়ে যায়...এখন কি করবে ভাইয়া কোন কিছু ভেবে না পেয়ে স্পিকারে বলিউম ফুল করে আয়াতুল কুরসি ছাড়ে... এটা ছাড়ার পরে বাহিরে থেকে বাচ্চাদের কান্নার আওয়াজ আসতে থাকে আর একটা কর্কশ গলায় শব্দ আসে সে ভাইয়াকে বলছিল তোর জন্য আমার বাচ্চারা কান্না করতেছে এসব বন্ধ কর না হলে তোর অনেক বড় ক্ষতি করব...ভাইয়া বুঝতে পারে যে তারা কষ্ট পাচ্ছে তাই ভাইয়া সারারাত সেদিন আয়াতুল কুরসি ছেড়ে রাখে সারারাত এমনই চলতে থাকে যখন ফজরের আযান দেয় তখন হঠাৎ এসব বন্ধ হয়ে যায়। সারারাত ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়..ঘর একদম নোংরা হয়ে যায় ভাইয়ার উপর শোধ নিতে না পেরে ওরা এমন ভাঙচুর করে...








যখন ভাইয়া বুঝতে পারে সে এখন বিপদমুক্ত তখন দৌড়ে বাড়ি থেকে বাইরে চলে আসে...এবং সেদিনই তারা সেই বাড়ি ত্যাগ করে। এই সম্পূর্ণ ঘটনাটা আমার ভাইয়া ভাবীর মুখে শোনা...ইভেন, আমি যখন তাদের বাসায় গিয়েছিলাম বাড়ি দেখতে তখন সে বাড়িটা দেখে আমার নিজেরও কেমন যেন অদ্ভুত অনুভব হয়েছিল। সেদিন এই বাড়ি ত্যাগ করা হলেও তাদের এই ট্রমা থেকে বার হতে অনেকদিন সময় লাগে...আর এই ঘটনার পরে তার ছোট ছেলেটা অনেক বেশি অসুস্থ থাকতো অনেক হুজুর দেখিয়ে অনেক ঝাড় ফুকের পরে তাকে সুস্থ করা হয় এখন তার বয়স সাত বছর চলে...

সবাই তাদের জন্য দোয়া করবেন

ঘটনাটি কেমন লাগলো?আর আমি গুছিয়ে লিখতে সক্ষম হয়েছি কিনা?

অবশ্যই জানাবেন...



 

Unique Code wait

No comments