লাশ খাওয়া ভূত।। The corpse eating ghost
গ্রামের মাঠ,মাঠের বুক চিরে চলে গেছে একটি কাচা সরু রাস্তা। সেই গ্রামে ঘরবাড়ি খুবই কম।একটা বাড়ি থেকে আরেকটা বাড়ি অনেক দূরে।সেই গ্রামের একটি বাড়িতে দুজন মানুষ বাস করতো। তারা স্বামী স্ত্রী। ভালোই কাটছিল তাদের দিনকাল।হঠাৎই একরাতে মহিলাটির স্বামি অসুস্থ হয়ে পরে। তিনি বিছানা ছেড়ে কিছুতেই উঠতে পারছেন না। আশেপাশে কোনও ঘরবাড়ি না থাকায় মহিলাটি কারো কোনও সাহায্য পায় না। তার স্বামীর অবস্থা বেশি একটা ভালো না। মহিলাটি তার স্বামির কাছে বসে আছে। তার স্বামি ঘনঘন নিশ্বাস নেয় ও আস্তুে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যায়। একসময় স্বামির এ অবস্থা দেখে মহিলাটি বুঝতে পারে যে তিনি আর বেঁচে নেই।তিনি মারা গেছে। মহিলাটি একটা বাড়িতে একা ,সামনে তার স্বামির লাশ পরে আছে। যে লোকটা কিছুক্ষণ আগেও জিবীত ছিল, এখন সে লোকটা তার সামনে লাশ হয়ে পরে আছে।
এই রাতের বেলা একটা বাড়িতে একা মহিলা।কি করবে বুঝে উঠতে পারে না।আশেপাশে বাড়িঘরও নেই যে,সে কারো সাহায্য সহযোগিতা নেবে।তবে কি এখন তাকে এই লাশটিকে সামনে নিয়ে একা একা সারা রাত কাটাতে হবে! কি ভয়ানক একটা বেপার। মহিলাটি কিছুটা ভয় পাচ্ছে।কি আশ্চর্য!!যে লোকটার সাথে এতোগুলো বছর কাটালো। যার সাথে অনেকদিন সংসার করলো। এখন তার লাশকে ভয় পাচ্ছে। কি একটা অবস্থা। রাত বাড়তে থাকে। তাতে মহিলার ভয়ও বাড়তে থাকে। রাতের বেলা তো লাশটাকে আর দাফন করা যাবে না। লোকজন কেউ নেই তো তাই।সকালে লোকজনকে নিয়ে লাশটা দাফন করতে হবে। তাই এই বিভিষিকাময় রাতটা তাকে লাশটিকে সামনে নিয়েই কাটাতে হবে।ঘরিতে প্রায় একটা বাজে। হঠাৎই দরজার কে যেন নক করে।মহিলাটি ভাবে এতো রাতে কে হতে পারে! উঠে গিয়ে দরজা খুলতেই দেখে, অপরিচিত অচেনা একটি লোক। লোকটিকে দেখে মহিলাটি জিগ্যেস করে কে আপনি?
আর আপনি কোথা থেকে এসেছেন?উত্তরে লোকটি বলে,সে নাকি তার স্বামির শৈশবকালের বন্ধু। লোকটি বলে উঠে আরে ভাবি। আপনি! কেমন আছেন ভাবি ?মহিলাটি বলে ভালো আর থাকি কি করে। আজ রাতে আপনার বন্ধু মারা গেছে। এই যে তার লাশ। লোকটি লাশটিকে দেখে বলতে থাকে আহা বেচারা খুব ভালো লোক ছিল।কিভাবে মারা গেল?মহিলা টি বলে অসুস্থ ছিল। অনেকদিন সে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পরে ছিল। আজ হঠাৎই মারা গেল। লোকটি একথা শোনে খুব আফসোস করতে থাকে। একসময় লোকটি বলে ভাবি,আমি বিদেশ ছিলাম।আজ বাড়ি ফিরছিলাম, আপনাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম,তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে একটু দেখা করেই যায়। মহিলা বললো ও আচ্ছা। কিন্তু এর আগে আপনাকে তো দেখিনি।লোকটি বলে আরে ভাবি বললাম তো আমি বিদেশ ছিলাম। অনেক আগে দুএকবার দেখেছেন। হয়তো আপনার মনে নেই।
লোকটি বলে ভাবি, আপনার ঘরে কি খাবার কিছু আছে? থাকলে যদি খেতে দিতেন।আমার খুব খিদে পেয়েছে। মহিলাটি বলে একে তো মরা বাড়ি। আচ্ছা ঠিক আছে আপনি বসুন,আমি খাবার নিয়ে আসছি।একথা বলে মহিলাটি খাবার নিয়ে টেবিলে রাখে।লোকটি খাবার খেতে থাকে। আরে ভাবি,আরো খাবার থাকলে দেন।অনেক খুদা লেগেছে। মহিলাটি ঘরে যা খাবার ছিল, লোকটিকে সব খাবার দিয়ে দেয়। সে খেয়াল করে লোকটি অস্বাভাবিক ভাবে খাবার খাচ্ছে। এবং কিছুক্ষণের মধ্েই সব খাবার খেয়ে শেষ করে ফেলে। লোকটি বলতে থাকে ভাবি।আরো খাবার থাকলে দেন,আমার এখনো খিদা মেটেনি। মহিলাটি বলে আচ্ছা খাবার তো শেষ হয়ে গেছে। আপনি বসুন। আমি খাবার রান্না করে নিয়ে আসি।
এই বলে মহিলাটি রান্না করতে রান্না ঘরে যায়। মহিলাটি রান্নার কাজে লেগে পরে।এক সময় মহিলাটি তাদের ঘর থেকে একটি আওয়াজ পায়। লোকটি যেখানে বসা ছিল। সেখান থেকে আওয়াজ টি আসছে। মহিলাটি উঠে ঘরের দিকে এগোতে থাকে। সে আস্তে আস্তে উঠোনে যায় এবং ঘরের ফাকা বা ছিদ্র দিয়ে দেখতে থাকে,যে শব্দ টি কোথা থেকে আসছে। মহিলাটি ঘরের বেড়ার ছিদ্র দিয়ে তাকিয়ে যা দেখে, তাতে তার চোখ কপালে উঠে যায়।মহিলাটি দেখে একি!! লোকটিকে এখন আর কোনো দিক থেকে মানুষের মতো মনে হচ্ছে না। দেখতে সেটা ভয়ঙ্কর এক জানোয়ারের মতো। বিশাল বড় দেহ সেটির। লম্বা লম্বা দাত।হাতে বড় নখ। মহিলাটি দেখে। তার স্বামির লাশের কাছে ভয়ানক দেখতে অবয়বটি লাশটির বুক চিরে র,ক্ত ও মাংস খাচ্ছে! এটা দেখে তো মহিলা অবাক হয়ে যায়। এ্্্্কি্্্্্ সর্বনাশ!!! এটা কি! কত ভয়ঙ্কর!!
মহিলাটি ভাবে, এখন সে যদি লাশটির কাছে যায়। তাহলে তার বিপদ হতে পারে।যদি তার কোনো ক্ষতি করে বসে।তাই মহিলা টি পূনরায় দৌড়ে রান্না ঘরে চলে যায়।চুলায় পাতিল বসানো আছে। মহিলাটি ভাবছে এখন কি করা যায়!কি করবে সে তা ভেবে পাচ্ছে না।যদি ভয়ঙ্কর সেই জিনিসটা লা,শ,টিকে খেয়ে এখন তার কাছে আসে, তাহলে সে কি করবে। তখন তাকে কে বাঁচাবে কে? এসব ভাবতে ভাবতে মহিলাটির মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। আগুন, হ্যাঁ চুলায় তো আগুন আছে। আর মহিলা টি এতোদিন সবার কাছে শুনে এসেছে যে,আগুনের কাছে নাকি খারাপ কিছু আসতে পারে না। খারাপ আত্না বা ছদ্মবেশী আগুনকে খুব ভয় পায়। এসব ভেবে সে চুলা থেকে একটু একটু করে আগুন বের করে তার চারপাশে রাখে। চুলা তখনো জ্বলছে।
মহিলাটি শুনে রান্নাঘরের দরজার সামনে সেই লোকটি দাড়িয়ে আছে। এ্্্কি! কিছুক্ষণ আগে তো সেই ভয়ঙ্কর জিনিসটা ভয়ঙ্কর রূপে ছিল। এখন সে আবারো মানুষের রূপ ধারন করেছে। লোকটি বলতে থাকে, ভাবি আমার খিদা কিন্তু এখনো মেটেনি। আমাকে কিছু খেতে দেন।মহিলা বুঝে গেছে এটা তো মানুষ না।তাই সে লোকটির কথায় কান না দিয়ে সে চুলায় আগুন জ্বালিয়েই যাচ্ছে।লোকটি আগুন থেকে দূরে সরে যায়।সে বললো ভাবি একটু বাহিরে আসেন তো?মহিলাটি বললো নাহ্। আমি কিছুতেই বের হবো না।আমি এখান থেকে কোথাও যাবো না।একথা শুনে লোকটি মূহুর্তের মধ্েই ভয়ানক রূপ ধারন করে। লোকটির ভয়ানক চেহারা। ও লম্বা লম্বা দাত। মহিলা এটা দেখে খুবই ভয় পায়।
ভয়ঙ্কর সেই জিনিসটা তখন বলছে।বের হয়ে আয় আমার খুব খিদে পেয়েছে।বের হয়ে আয় বলছি। লা,শ খেয়েছি। এখন তোকে খাব। এটা শুনে মহিলা টি খুবই ভয় পায়।একসময় রান্না ঘরের সব লাকড়িই শেষ হয়ে যায়।এখন উপায়!! মহিলাটি খুবই ভয় পাচ্ছে। কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। একসময় চুলার আগুন নিভে যায়।তার কাছে এখন আগুন নেই। ভয়ঙ্কর সেই জিনিসটা এক সময় রান্না ঘরে ডুকে পরে।আর বলতে থাকে হাহাহাহা লাশের সাথে তোকে ও আজ খাব। আমার অনেক খিদা।এই বলেই যেইনা মহিলার কাছে যায় অমনি মহিলাটি চোখ বন্ধ করে দোয়া দূরুদ পড়তে লাগলো। কিছু সময় চলে যায়। মহিলাকে সেটি কিছুই করেনাি।সে জীবনের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছে।কিছুক্ষণ বাদে চোখ খুলে দেখে তার সামনে কিছুই নেই।আর এদিকে চারদিকে ফজরের আজান হচ্ছে। ভাগ্িস আজ আজানের জন্ মানে রাত পোহানোর কারনে মহিলাটি প্রানে বাঁচলো।
সে দৌড়ে সেই রুমটি তে যায়...যে রুমটিতে তার স্বামীর লাশটি রাখা ছিল।গিয়ে যা দেখে তা দেখে তার চোখ কপালে উঠে যায়।মহিলাটি লাশটির কাছে গিয়ে অবাক দৃষ্টিতে দেখে।লাশ থেকে র,ক্ত গড়িয়ে পরছে।লা,শটির বুক চি,রে মাংস ও র,ক্ত খেয়েছে খারাপ সে ভূতটি।একটা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়ে মহিলাটি কান্না করতে থাকে।আর তখনই লোকজন আসতে থাকে।একসময় গ্রামের লোকজন তার উপরই তার স্বামি হ,ত্যা,র দোষ চাপায়।কেউই তার কথা বিশ্বাস করেনা।গ্রামের লোকজন পু,লি,শ,কে খবর দেয়।দ্রুত পু,লি,শ আসে ও সবকিছু দেখতে থাকে।মহিলাকে অনেক কিছুই জিগ্যেস করে।কিন্তু মহিলা যা বলছে,তা পু,লি,শ বিশ্বাস করে না।পু,লি,শ বলছে এসব ভূত টুত হয় নাকি? তাও আবার লাশ খাওয়া ভূত।যতোসব পাগল! এই মহিলা কে মনে হচ্ছে মানষিক রোগি। তার মাথায় সমস্যা আছে।মহিলাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
লাশটি
পোস্টমর্টেম করার পর যে
রিপোর্ট আসে,তা দেখে
পু,লি,শের চোখ
কপালে উঠে যায়।মহিলাটির স্বামিকে
কেউই হত্যা করেনি।বরং সে বিরল রোগের
জন্য মরেছে।তারপর লাশটিকে কিছু একটা খেয়েছে!!
জানোয়ারের মতো করে খোবলে
খোবলে খেয়েছে লাশটি।পু,লি,শ কোনো
প্রমান পায়নি।কি আর করা মহিলাটিকে
পাঁচ বছরের জন্য জেলে পাঠালো।কারন
প্রশাসন তো ভুতে বিশ্বাস
করবে না।মহিলাটি কারাগারে বন্দি।হঠাৎই সে খেয়াল করে
একজন লোক নাকি তার
সাথে দেখা করতে এসেছে।মহিলাটি
ভালো করে খেয়াল করলেই
চমকে উঠে!আরে এটাতো
সেই লোকটা।যে লোকটা রাতে তার স্বামীর
লাশটা খেয়েছিল! মহিলাটি অবাক দৃষ্টিতে সেই
লোকটির দিকে তাকিয়ে থাকে।
সমাপ্ত।
(গল্পের
কাহিনী ও চরিত্র সম্পূর্ন
কাল্পনিক।)
Post a Comment